নওগাঁর ধামইরহাট থানা হেফাজতে থাকা ট্রাংক ভেঙে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে আশঙ্কা করেন সংশ্লিষ্টরা। ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। গত মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটলেও গতকাল বৃহস্পতিবার তা জানাজানি হয়। এরপর জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে থানা হেফাজতে থাকা এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র রাখার একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে দেখা যাচ্ছে, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের জন্য সিলগালা করা ট্র্যাংকটির দুটি তালা ভেঙে ফেলা হয়েছে। ট্র্যাংকের ভেতরে থাকা ইসলামের ইতিহাসের এক সেট প্রশ্ন ছেঁড়া অবস্থায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে।
ট্র্যাংক ভেঙে এইচএসসির প্রশ্নপত্র চুরি যাওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নওগাঁর জেলা প্রশাসক আবদুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘থানা হেফাজতে থাকা এইচএসসি পরীক্ষার লকার বাক্সের ভেতর থেকে প্রশ্নপত্র চুরির কথা জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রশ্নপত্রের বাক্সের তালা কোনোভাবেই খোলা থাকার কথা নয়। এটা তো একটা অঘটন ঘটেছেই, এ ছাড়া বাক্স থেকে প্রকৃতপক্ষে কোনো প্রশ্নপত্র চুরি হয়েছে কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে। প্রশ্নপত্র চুরি বা ফাঁসের ঘটনায় যে বা যাঁদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলবে, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘যে প্রশ্নপত্র চুরি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তা ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের। বিষয়টি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের প্রধানকে জানানো হয়েছে। আগামীকাল শনিবার বোর্ডের প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) সাদিয়া আফরিন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ওই বাক্সে যে পরিমাণ প্রশ্নপত্র থাকার কথা, সেটাই পাওয়া গেছে। তবে বাক্সটি খোলা পাওয়া গেছে। বাক্সটির তালা ভেঙে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে থাকতে পারে। এটা হয়ে থাকলে কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
২৬ জুন থেকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মালেকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
তবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সরওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, থানা–হাজত থেকে আদালতে নেওয়ার সময় এক আসামি প্রশ্নপত্রের ওই বাক্স খুলে প্রশ্নপত্র চুরি করার চেষ্টা করেন। বাক্স থেকে কোনো প্রশ্নপত্র নিতে পারেনি। তবে একসেট প্রশ্নপত্রের কিছু অংশ ছিঁড়ে ফেলেছেন। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। পুলিশের কোনো গাফিলতি থাকলে দায়ী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।