ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে টানাপোড়েন ঘুচবে না বাড়বে?

জুলাই অভ্যুত্থানের বার্তা প্রতিবেশী ভারত এখনও সঠিকভাবে পড়তে পারেনি বলে ধারণা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের। মূলত সে কারণেই ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা যাচ্ছে। সংকট সমাধানে ভারতের আন্তরিকতার ঘাটতি আছে বলেও মনে করেন তারা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভালো না হলে কেবল দু’দেশ নয়, পুরো অঞ্চলকেই ভুগতে হবে। ভারত পনেরো বছর আগের বাংলাদেশ আর পাবে না। তাই নতুন সরকারের সাথে দূরত্ব কমানোর তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা।

জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর অনেক কিছুই পাল্টে গেছে। সেই বদলের সারথী যেমন দেশের মানুষ, তেমনি বন্ধুরাষ্ট্র থেকে উন্নয়ন সংস্থাগুলোও।

পাঁচ আগস্টের পর থেকেই প্রতিবেশী ভারতে অবস্থান নিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মূলত এই ইস্যুতেই ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফরে বরফ গলার সম্ভাবনা থাকলেও কাজের কাজ খুব একটা হয়নি। বরং সীমান্তে শিশুসহ নিরপরাধ বাংলাদেশি নাগরকিদের হত্যার ঘটনায় দূরত্ব আরও বেড়েছে।

সবশেষ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া তৈরির ভারতীয় চেষ্টা বন্ধ করেছে বাংলাদেশ। ফলাফল ঢাকা ও দিল্লিতে কূটনীতিককে তলব-পাল্টাতলব। এই অস্থরিতা কমাতে ঢাকা নানা উদ্যোগ নিলেও তাতে দিল্লি সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ বিশ্লেষকদের।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবীর বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের বার্তা সঠিকভাবে না পাওয়াতেই প্রতিবেশী দেশের সাথে ভিসা জটিলতাসহ নানান সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এর ফলে ভারত তাদের প্রতিবেশীদের কাছেও বাংলাদেশের বিষয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

বিবিসির খ্যাতনামা সাংবাদিক ডেভিড লয়েন। এখন কাজ করছেন লন্ডনের কিংস কলেজে। প্রায় চার দশক ধরে দক্ষিণ এশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে বোঝাপড়া তার।

তিনি বলেন, গত পাঁচ দশকেও বাংলাদেশের সাথে প্রকৃত অর্থে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি না করতে পারা বড় দেশ হিসেবে ভারতের ব্যর্থতা।

বৃটিশ এই সাংবাদিক ও গবেষক বলেন, গত ১৫ বছর মূলত শেখ হাসিনার সরকারের সাথে ভাল সম্পর্ক রেখেছিল তারা। এর বাইরে অন্য যে সরকারগুলো এদেশে ছিল তাদের সাথে বোঝাপড়া কতটা ভাল ছিল, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে।

তিনি আরও বলেন, আগস্টের পরও অস্থিরতা কাটাতে ভারতের প্রচেষ্টা দেখিনি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের যেসব শুভাকাঙ্খী আছেন, তাদের কাজে লাগিয়ে ভারতের কাছে বাংলাদেশের বার্তা স্পষ্ট করতে হবে। আসলে এটাই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ভাল করার সঠিক সময়। তবে দিল্লির কোটে যে সমাধানের চাবি সেটাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

প্রতিবেশি বদলের সুযোগ নেই, তাই পারস্পরিক স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে দু’দেশকেই উদ্যোগ নেয়ার্ আহ্বান জানান এই দুই বিশ্লেষক।

/এমএইচ

Check Also

হাসিনার কথা মনে পড়ল ট্রাম্পের! বাংলাদেশ নিয়ে নতুন বার্তা

বাইডেন সরকারের বাংলাদেশ নীতির প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচিত মার্শা বার্নিকাটকে বিদেশ দপ্তরের পদ ছাড়ার নির্দেশ …

Leave a Reply